বিয়ে করার সহজ উপায়

বিয়ের জন্য প্রথমে আপনাকে নিয়্যত করতে হবে; এরপরে কিছু কাজ আছে যা ধারাবাহিকভাবে করা উচিৎ তাহলে সহজে বিয়ে হতে পারে। 

বিয়ে করার সহজ উপায় নিয়ে কিছু আলোচনা যা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়াঃ

১। পিতা-মাতা, অভিভাবকদের জানান

বিয়ের নিয়্যত করার পরে নিজের পিতা-মাতা বা অভিভাবকদেরকে জানাতে হবে যে আপনি বিয়ে করতে চান। এক্ষেত্রে অনেকে লজ্জা পান, সরাসরি বলতে চাননা। নিজের আপনজন কাউকে দিয়ে জানান উচিৎ। বিশেষ করে ছেলেদের ক্ষেত্রে। কারণ, মেয়েদের বিয়ের ব্যাপারে অভিভাবকরা  নিজের থেকেই সাধারণত চিন্তিত থাকেন। বিয়ের উপযুক্ত বয়স হলেই অভিভাবকরাই বিয়ের জন্য চেষ্টা শুরু করেন। কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে তাদের যেহেতু বিয়ের পরে দায়িত্ব অনেক বেশি থাকে তাই তাদের বিয়ের ব্যাপারে অভিভাবকরা সহজে সাধারণত বলতে চান না। অভিভাবকরা চান যেন ছেলে নিজেই বিয়ের কথা তাঁর অভিভাবককে বলেন। তবে মেয়েরাও নিজের বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহের কথা জানাতে পারে, এতে অসুবিধে নেই। 

২। শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করা

বিয়ের জন্য সুস্থতার অভ্যাস করতে হবে। শারীরিক এবং মানসিক উভয়ভাবেই। ঝগড়া করা, অপরকে তুচ্ছ মনে করা, তর্ক করা, পরিস্কার পরিচ্ছন না থাকা এবং মানুষের সাথে মিলে মিশে চলার অভ্যাস না থাকলে বিয়ে পরবর্তী জীবনে মেয়েদের সমস্যা হয়। আর এসব সমস্যা সাধারণত অসুস্থতা থেকেই বেশি হয়। আবার ছেলের ক্ষেত্রেও সুস্থতা খুব জরুরী। জীবন যুদ্ধের প্রাথমিক পর্ব হল বিয়ে। আর বিয়ের পরে অনেক পরিশ্রমী কাজ এবং সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা সুস্থ দেহ ও মনের উপর অনেকাংশ নির্ভর করে। 

৩। বিয়ের জন্য কনে বা বরকে দেখার সময় করণীয় কি জানার চেষ্টা করা

বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র/পাত্রীর দেখা সাক্ষাতের অল্প সময়ের মধ্যে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাই এই সময়ে কি জেনে নেওয়া উচিৎ তা অভিজ্ঞ ও সৎ মানুষদের সাথে আগেই পরামর্শ করে জেনে রাখা দরকার। যেমন, কোন পাত্রীর কারো সাথে প্রেম বা সম্পর্ক আছে বা তাকে কেউ পছন্দ করে- এরুপ থাকলে বিয়ের পরে যেন সমস্যা না হয় সেই জন্য কিছু আলোচনা আগেই হতে পারে। কারো অসুস্থতা থাকলে জেনে নেওয়া দরকার যাতে বিয়ের পরে সেই সমস্যা পরামর্শ করে সমাধান করা যায়। এরকম আরও কিছু বিষয় যা অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছে থেকে জেনে নেওয়া দরকার। 

৪। কেমন পাত্র/পাত্রী হবে তার একটি ছক অংকণ করা

বিয়েতে নিজের মতামত স্পষ্ট হওয়া দরকার। যেমন, পাত্র/পাত্রীর বয়স, পেশা, পড়াশুনা, উচ্চতা, ঠিকানা ইত্যাদি সংক্ষেপে একটি ছক অংকন করে সে অনুযায়ী চেষ্টা করা দরকার। তানাহলে আপনি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেননা। নিজের যোগ্যতা ও পছন্দনুযায়ী চাহিদা থাকা উচিৎ। যা পরিবারের সবাইকে জানিয়ে রাখা ভাল। তবে এরমধ্যে কোন জিনিস বেশি প্রাধান্য দিবেন, কোনটি না হলেও চলবে বা কোনটিকে কম প্রাধান্য দিবেন ঠিক করতে হবে।

৫। কিছু অর্থ জমানো

বিয়ের সময় কিছু টাকা খরচ হয় বা হবেই। এই টাকা হঠাৎ করে ব্যবস্থা হওয়া সাধারণত একটু কঠিন। তবে এই টাকা ব্যবস্থাও হয়ে যায়। কিন্তু যদি পূর্ব প্রস্তুতি থাকে অর্থাৎ জমানো থাকে তাহলে যখন প্রয়োজন সহজেই খরচ করা যাবে। আর কাছে না থাকলে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজ টাকার জন্য পিছিয়ে যায় বা হয়না। তাই বিয়েকে সহজ করতে কিছু টাকা জমানো থাকলে উপকার হবে। 

৬। সুন্দর পোশাক

বিয়ের প্রস্তুতিকে সহজ করতে কিছু সুন্দর ও আকর্ষনীয় পোশাক ক্রয় করতে হবে। পাত্র/পাত্রী একে-অপরকে দেখার সময় এসব পোশাক পরিধান করা উচিৎ যাতে একে-অপরের প্রতি ভাল ধারণা সৃষ্টি হয়। 

 ৭। কত দিনের মধ্যে বিয়ে করতে চান নির্ধারণ করুন

বিয়ের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সময় নির্ধারণ করা। অনেকেই বিয়ে করতে চান বা নিজের ছেলে/মেয়েকে বিয়ে করাতে চান কিন্তু নির্দিষ্ট কোন সময় নির্ধারণ করেননা, এতে বিয়ের গরজ কমে যায়। আর সময়সীমাহীন  টার্গেট কখনও তেমন সফল হয়না। আর সময়মত না হলেও নিজের মধ্যে আরো চেষ্টার প্রবণতা সৃষ্টি হয়। তাই বিয়েকে সহজ করতে সময় নির্ধারণ করে চেষ্টা শুরু করতে হবে।

৮। বিয়েটাতে রেজিস্ট্রেশন করুন

বিয়ের জন্য পরিকল্পনা করে বসে না থেকে দ্রুত বিয়েটাতে রেজিস্ট্রেশন করুন। নিজের পছন্দ, নিজের তথ্য সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন। রেজিস্ট্রেশন কমপ্লিট হলেই আপনি পাত্র/পাত্রীর সংক্ষিপ্ত প্রফাইল দেখতে পারবেন। 

৯। প্ল্যান আপগ্রেড করে অনুরোধ/প্রস্তাব পাঠান শুরু করুন

পছন্দমত পাত্র/পাত্রী পেলেই প্ল্যান আপগ্রেড করে অনুরোধ/প্রস্তাব পাঠান শুরু করতে হবে। পছন্দমত না পেলে বিয়েটার হেল্পলাইনে যোগাযোগ করে অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইন সার্ভিস নিতে হবে। হেল্পলাইনে নিজের বায়ো-ডাটা জমা দিয়ে নিজের পছন্দের কথা বিস্তারিত বলতে হবে। এসব ধাপ অতিক্রম করলে আশা করা যায় আপনার বিয়ে সহজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। 

১০। দোয়া ও নিয়মিত আমল করতে থাকুন

মহান আল্লাহর হুকুম বা রহমত ছাড়া বিয়ে হওয়া সহজ নয়। তাই নিয়মিত আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে, কিছু দান, নফল নামাজ করে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে। 

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.